বরিশালে শীতজনিত রোগে শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ

বরিশালে শীতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। নবজাতক বিভাগে শিশুরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, তাদের মধ্যে বেশির ভাগ শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছে। গত বছরের শেষ দিকে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় দ্বিগুণ। নতুন বছরের শুরুতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে রোগী ভর্তি ছিল ৭২ জন। শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ছাড়াও শীতের তীব্রতায় শিশুদের সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাও বেশি। সেই সঙ্গে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত আরও অনেক ধরনের রোগ। গতকাল বুধবার হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ১৪ জন।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালের বেডে জায়গা না হওয়ায় শিশু বিভাগের মেঝেতেও শিশুদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের শিশু বিভাগে নির্ধারিত বেড সংখ্যা ৩৬, যেখানে বর্তমানে রোগী ভর্তি আছে ৭১ জন। যা গত সপ্তাহে ছিলো ৮৯ জন। বর্তমানে এ বিভাগে অতিরিক্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩৫ জন।
এদিকে করোনা ভাইরাসের (অমিক্রণ) ভয়ে হাসপাতালে রোগী ভর্তি হচ্ছে কম। এতে শিশু ও নবজাতকরা সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শারমিন আক্তার।
নিপা রানী বলেন, ‘আমরা গত ২৯ ডিসেম্বর ভর্তি হইছি। বাচ্চার অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পরে ডাক্তার বলছে নিউমোনিয়া হইছে। এখনও বাচ্চার জ¦র-কাশি আছে। এই শীতের কারণেই এমনটা হইছে।’
অসুস্থ জান্নাতের মা, মনি আক্তার বলেন, ‘১০ দিন পর্যন্ত আমার বাচ্চার জ¦র ছিল। পরে বাচ্চা সুস্থ্য না হলে আমরা এই হাসপাতালে ভর্তি হই। এখানে দুই দিন ধরে আছি। আমার মেয়ের ঠান্ডার কারণে ছেড়ে ছেড়ে জ¦র ওঠে। চিকিৎসা পেয়ে এখন মোটামুটি সুস্থ।’
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ‘শিশু বিভাগে তুলনামূলক কম রোগী আছে। নবজাতক বিভাগে চিকিৎসা নিতে আশা শিশুর সংখ্যাই বেশি। তাদের মধ্যে শ্বাসকষ্টে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। এদের মধ্যে অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি যাচ্ছে। কিন্তু তিন-চার দিনের মধ্যে তাদের আবার হাসপাতলে ফিরতে হচ্ছে। শীতকালীন সময়ে বাচ্চাদের সুস্থ্য রাখার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যাতে ঠান্ডা কম লাগে সেই দিকে মায়েদের লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে নবজাতক ডেলিভেরী হওয়ার পর আত্মীয়-স্বজন এসে যাতে ভীড় না করে এবং নবজাতকের কাছে অশ্যই মাক্স পরে থাকতে হবে।
হাসপাতলের শিশু বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. যুবায়ের আহমেদ জেনিট বলেন, ‘ভর্তি হওয়ার পর আমরা রোগীর অবস্থা দেখে যাদের এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন হয় তাদের এন্টিবায়োটিক দেই। যাদের এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন হয় না তাদের সাধারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছি। এছাড়া যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তাদের হাসপাতলে ভর্তি রেখে চিকিৎসা প্রদান করছি।’